ঢাকা , শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪ , ৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আদাবর ৩০ নং ওয়ার্ডের বিএনপির সভাপতি সালামতের অস্ত্রবাজি,চাঁদাবাজি মামলা বাণিজ্য।

ডেস্ক রিপোর্ট
আপলোড সময় : ১৫-১২-২০২৪ ০৫:৪৭:২৩ অপরাহ্ন
আপডেট সময় : ১৫-১২-২০২৪ ০৫:৪৭:২৩ অপরাহ্ন
আদাবর ৩০ নং ওয়ার্ডের  বিএনপির সভাপতি সালামতের অস্ত্রবাজি,চাঁদাবাজি মামলা বাণিজ্য।
                                                                                                                                                                    পর্ব-2

রাজধানীর আদাবর থানাধীন ৩০ নং ওয়ার্ডের বিএনপির সভাপতি সালামত হাওলাদারের চাঁদাবাজি ও মামলা বাণিজ্যের অভিযোগের ভিত্তিতে প্রথম পর্বের নিউজের পরে ৩০ নং ওয়ার্ড এলাকায় অনুসন্ধানী রিপোর্টে অভিযোগের প্রমাণ মিলেছে । এ বিষয়ে এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে যা জানা যায়, সালামত হাওলাদার তার গ্রামের বাড়ি ভোলা জেলার সদর থানায় । তিনি প্রায় ৩০ বছর আগে পারিবারিক সচ্ছলতা আনতে ভোলা থেকে পরিবারসহ ঢাকায় পাড়ি জমিয়ে  আদাবর এলাকায়   টিন সেটের একটি বস্তিতে  ওঠেন । দারোয়ানের চাকরি করে কোনভাবে  দিন এনে  দিন খেয়ে পরিবার নিয়ে  চলতে থাকে । এরই মধ্যে বিএনপির  রাজনীতির সাথে যোগ দিতে দেখা যায় । আওয়ামী লীগের শাসনামলে একাধিক মামলা থাকার কারণে এলাকা ছাড়া ছিলেন । এরমধ্যে বিএনপি'র ওয়ার্ড কর্মীসভায় বিশেষ এক জেলায় বাড়ি হওয়ায় কপাল খুলে যায় তার, পেয়ে যান সভাপতি পদ। গত ৫ ই আগস্ট এর আগে বিরোধী দলের কর্মী হওয়ার কারণে গত ৫ ই আগস্ট এ সরকার পতনের পর তার ভাগ্যের চাকা খুলে যায়। বিএনপি ক্ষমতায় না আসলেও ৩০ নং ওয়ার্ডের বিএনপির সভাপতির পথ দেখিয়ে ভয়-ভীতি প্রদর্শন শুরু করেন । নিজ এলাকার গণ্ডি পেরিয়ে অন্য থানায়ও শুরু করেন চাঁদাবাজি, অস্ত্রবাজি এবং মামলা বাণিজ্য কথা না শুনলে হুমকি।

৩০ নং ওয়ার্ডের গণ্ডি পেরিয়ে দারুস সালাম থানাধীন দিপনগরের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানেও চলে তার চাঁদাবাজি ও অস্ত্র বাজি কথা না শুনলেই মিথ্যা মামলা এরপর নাম প্রত্যাহারের নামে মোটা অংকের টাকা দাবি। এ বিষয়ে দারুস সালাম থানার স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক ব্যবসায়ী সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, আমি দীপ নগরে ইট, বালু, পাথরের ডামপ ট্রাকের ব্যবসা করি । সালামত হাওলাদার তার কাছে ক্লাবের এসি কেনার জন্য প্রথমে ৩০ হাজার টাকা দাবি করেন । বিএনপির প্রোগ্রাম হলেই জোর করে আমার ট্রাক নিয়ে মিটিং মিছিল করে বেড়ায়। আমি ১০ হাজার টাকা দিলেও অতঃপর  আমাকে আওয়ামী লীগ বানিয়ে আদাবর থানায় মিথ্যা মামলায দেয়। এরপর আরো হুমকি ধামকি দিতে থাকে এবং মামলার থেকে নাম কেটে দেওয়ার জন্য ছয় লক্ষ টাকা দাবি করেন। এই টাকা না দিতে পারায় এখনো প্রতিনিয়ত আমমি বিভিন্ন হুমকির সম্মুখীন হচ্ছি।

সাত্তার নামের আরেক ব্যবসায়ী বলেন, আমার সাথে সালামতের পূর্বের সামান্য কথা কাটাকাটির শত্রুতার জের ধরে। গত ৫ই আগস্ট এর পরে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেয় । এরপর আমাকে তার বাসায় দাওয়াত করে নিয়ে মামলা থেকে নাম কেটে দেয়ার কথা কথা বলে আমার কাছে  টাকা দাবি করে।  তাকে  কিছু টাকা দিয়ে নাম কাটিয়ে বাঁচতে চেয়েছিলাম। কিন্তু তিনি নাম না কেটে উল্টা আরো তিন  লক্ষ টাকা  দাবি করছেন। আরিফ নামের একজনকে পাঠিয়ে তার ক্লাবে যাওয়ার জন্য হুমকি ধামকি দেয়। সালামত এর সাথে কবে একটু কথা কাটাকাটি হয়েছিল তার জের ধরে আমাদেরকে প্রতিনিয়ত মিথ্যা মামলার হুমকি ধামকি দিয়ে  জীবন অতিষ্ঠ করে তুলছে।  

কামাল হোসেন নামের আরেক ব্যবসায়ী বলেন, আমরা গাবতলী ঘাটে টুকিটাকি ব্যবসা করে পরিবার নিয়ে কোন মতে বেঁচে আছি। ৫ ই আগস্ট ফ্যাসীস সরকার পতনের পরে আমাদের কয়েকজনের কাছে সালামত হাওলাদার দেশীয় অস্ত্র সহ কিছু লোকজন নিয়ে আসে। আদাবর ১৬ নম্বরে একটা ক্লাবের জন্য এসি ,টিভি, চেয়ার টেবিল সহ অন্যান্য মালামালের জন্য আমাদের কাছে তিন লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে। আমরা তাকে বলি আমরা গরীব মানুষ এখানে টুকটাক কাজকর্ম করে খাই আমরা এত টাকা পাব কোথায়। তখন সালামত বলেন, কোথা থেকে দেবেন জানিনা তবে তিন লক্ষ টাকা আমার চাই। তার কিছুদিন পরে শুনি আদাবর থানায় তাদের নামে অনৈতিক মিথ্যা মামলা দিয়েছেন। মিথ্যা মামলা থেকে নাম পতাহারের জন্য বিভিন্ন লোকের মাধ্যমে মোটা অংকের টাকা দাবি করতেছেন। সেই সাথে হুমকি ধামকি দিয়ে যাচ্ছেন।


নাদিম নামের আরেক ব্যবসায়ী বলেন, আমি দিপ নগরের ছোটখাটো একটা ব্যবসা করি। ৩০ ওয়ার্ডের সভাপতি সালামত হাওলাদার গত ৫ তারিখের পরে দেশে অস্ত্রসহ ২০থেকে ২৫ জন পোলাপান নিয়ে আমার প্রতিষ্ঠানে হামলা চালায় এবং নগদ ত্রিশ হাজার টাকা নিয়ে যায় । তার অফিসের এসির জন্য আবার ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে যায়। তার প্রমাণ আমার সিসি ক্যামেরা ফুটেজ এখনো আছে। এরপরে শুনি আমার বিরুদ্ধে আদাবর থানা মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে। মিথ্যা মামলা থেকে নাম কাটিয়ে কথা বলে তার বাসায় দাওয়াত করে নিয়ে যায়। বাসায় নিয়ে গরুর মাংস দিয়ে ভাত খাওয়াইয়া আরিফ আর কাওসার মোল্লাকে দিয়ে আমার কাছে মামলা থেকে নাম কাটানো জন্য আড়াই লক্ষ টাকা দাবি করে। সেই টাকা না দিতে পেরে বিগত তিন মাস আমি আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ঢুকতে পারি নাই। প্রতিনিয়ত বিভিন্ন প্রকারের হুমকি থামকি দিয়ে যাচ্ছে। সেই সাথে পোলাপান নিয়ে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মহড়া দিয়ে বেড়ায়।  

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেকজন বলেন বলেন, সালামত হাওলাদার প্রকাশ্যে কিশোর গ্যাং নিয়ে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে মহড়া দিয়ে চাঁদাবাজি ও হুমকি ধামকি দেন। তিনি জোর গলায় বলেন, বিএনপি তাকে নাকি এসব করার জন্য লাইসেন্স দিয়েছেন। এলাকাবাসী আরো অভিযোগ করেন পতিত আওয়ামী লীগ  গুন্ডাদের সাথে নিয়ে এলাকায় অস্ত্রবাজি করছেন। চাঁদাবাজি করছেন। সাথে নিরীহ মানুষদের মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছেন। তাদের কথার বাইরে গেলেই আসে নানান প্রকার হুমকি।

এলাকাবাসী ও ব্যবসায়ীদের দাবি আমরা  এই রাক্ষস চাঁদাবাজ এর  হাত থেকে বাঁচতে চাই। আমরা আপনাদের সহযোগিতা কামনা করি। আমরা যেন অত্র এলাকায় শান্তিতে বসবাস করতে পারি। নির্ভয় ব্যবসা-বাণিজ্য  করে পরিবারের মুখে দুমুঠো ভাত তুলে দিতে পারি।
অনুসন্ধানের চাঞ্চল্যকর আরো বিশেষ কিছু তথ্য থাকছে বিস্তারিত আগামী পর্বে---

নিউজটি আপডেট করেছেন : News Upload

কমেন্ট বক্স

এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ